সুনামগঞ্জ , বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নাশকতার প্রস্তুতির অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতা কারাগারে জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্ধ শতাধিক ছাত্রেরর স্কাউট দীক্ষাগ্রহণ দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের আয়-সম্পদের তথ্য প্রকাশের আহ্বান টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ মন্ত্রণালয়ে আত্মঘাতী হামলায় আফগান মন্ত্রী নিহত পোশাক খাতে কৃত্রিমভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে : এম সাখাওয়াত বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য সোলার ফ্লাড লাইট বিতরণ খরচার হাওরের রাবার ড্যামে লিকেজ, সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক নিত্য যানজটে চরম ভোগান্তি শাল্লায় ছুটি না নিয়েই দুই সপ্তাহ অনুপস্থিত শিক্ষা কর্মকর্তা জামালগঞ্জে নাশকতার মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেফতার হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত : মৎস্য উপদেষ্টা তাহিরপুরে মডেল মসজিদ নির্মাণ ১৮ মাসের কাজ হয়নি ৫ বছরেও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির নির্বাচন ছাতক নৌপথে অবাধে চাঁদাবাজি ছাতকে মারামারিতে যুবক নিহত অধিকার’র উদ্যোগে মানবাধিকার দিবস পালিত বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপিত: সম্মাননা পেলেন শ্রেষ্ঠ জয়িতারা ধর্মপাশায় ৫ জয়িতাকে সংবর্ধনা এমএ মান্নান মেধা বৃত্তি পেয়েছে ফারিহা একাডেমি’র ৬ শিক্ষার্থী

হাওর ও বালি-পাথর মহাল ইজারা দেওয়া বন্ধ করুন

  • আপলোড সময় : ১২-১২-২০২৪ ০৭:৫৮:১৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-১২-২০২৪ ০৭:৫৮:১৫ পূর্বাহ্ন
হাওর ও বালি-পাথর মহাল ইজারা দেওয়া বন্ধ করুন
পত্রিকান্তরের খবরে প্রকাশ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। মানুষের জীবন ও জীবিকা নষ্ট করে ইজারা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না।” আমরা তাঁর বক্তব্যের সমর্থন করি সর্বান্তকরণে এবং ধন্যবাদ জানাই। তিনি তাঁর বক্তব্যে ভাটি-অঞ্চলের জনসমাজের মনের কথাকে ধারণ ও প্রকাশ করতে পেরেছেন। আমরা মনে করি এখনও পর্যন্ত ভাটি অঞ্চলে পরিচালিত সকল রকম উন্নয়নকর্ম ভাটি-অঞ্চলের প্রাণপ্রকৃতিবিরোধী প্রবণতা অর্থাৎ প্রাণপ্রকৃতি বিনাশী বৈশিষ্ট্যম-িত একধরণের অবৈজ্ঞানিক ও বিমানবিক কিংবা দানবিক কর্মকা-। এই কর্মকা- ভাটি অঞ্চলের নদী-খাল-বিল-হাওরের প্রাণপ্রকৃতিকে বিনাশ করে হাওরকে জলের মরুভূমি করে দিতে চাইছে। জলের মরুভূমি মানে, যে-জলাধারে জল থাকবে কিন্তু জলজ জীববৈচিত্র্যের কোনও অবশেষ পর্যন্ত থাকবে না। ইতোমধ্যেই টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাণবৈচিত্র্য এতোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেটাকে এখন জলের মরুভূমি বলে বিবেচনা করাই যায়। যে-জলাধারে নৌকা চলাচলের সাড়া পেয়ে বড় বড় রুই মাছেরা নৌকার চারপাশ ঘিরে লাফালাফি শুরু করে দিতো, এখন সে-জলাধারে রুই, চিতল, মহাশুল, এলং তো দূরের কথা দাড়কিনারও দেখা মিলে না সহজে। কেবল টাঙ্গুয়া নয়, বলতে গেলে, সমগ্র ভাটি অঞ্চলের প্রতিটি বিল-নদীই মৎস্যশূূন্য হয়ে পড়েছে। হাওরাঞ্চলে কেবল জলজ প্রাণিকূলই নয় উদ্ভিদকূলও প্রজাতি বিলুপ্তির শিকারে পরিণত হয়েছে ও হচ্ছে। হাওরাঞ্চলের প্রাকৃতিক অবস্থার প্রকৃত তথ্য হলো, সেখানে ইতোমধ্যে অনেক প্রজাতির জীব অর্থাৎ প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ব্রিটিশ আমল থেকে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও রাষ্ট্রসরকার প্রতিষ্ঠিত হয় নি, যে-রাষ্ট্রসরকারের প্রশাসনিক প্রতিনিধি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের মতো প্রকৃতিবান্ধবতার পরিচয় দিয়েছেন। ইতিহাসের কাল পরিক্রমায় বোধ করি ব্যতিক্রম আমাদের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বর্তমানে বৈশ্বিক প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়গ্রস্ত, এটি কোনও নতুন তথ্য নয়। বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠিত বিপুল বিক্রমী পুঁজিতান্ত্রিক পরিসরে ব্যক্তিমালিকনার আধিপত্য মানুষের পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য ব্যাপক ব্যবস্থা অবলম্বনে বাঁধা দেয়, আর একচেটিয়াদের মুনাফার তাড়নায় ছারখার হয় প্রাকৃতিক সম্পদ। এই যখন বৈশ্বিক অবস্থা, তখন বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পর্যবসিত বাংলাদেশের একজন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার কতোটা সফল হবেন জানি না। আমরা তাঁর সঙ্গে আছি এবং থাকবো। কিন্তু তিনি সফল হোন আর না হোন ভাবি বাংলাদেশের ইতিহাসে তাঁর নাম প্রকৃতিবান্ধব মানুষের তালিকায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়ে থাকবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আর একটি বিশেষ প্রসঙ্গের অবতারণা করে বক্তব্য শেষ করবো। আমাদের সুনামগঞ্জের সুরমার উত্তরপাড়ে বালি-পাথর মহালে বালি-পাথর উত্তোলন করা হয় বাষ্পীয়শক্তি চালিত বিভিন্ন খননযন্ত্র দিয়ে। ফলে এখানে ব্যাপকাকারে নদীর প্রকৃতিগত গভীরতা দুই/তিন হাতের বদলে ত্রিশ/চল্লিশ হাতে গিয়ে ঠেকেছে, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘিœত করে নদীভঙান তৈরি করে স্থাপনা, ফসলি জমি, বনভূমি ইত্যাদি গ্রাস করে নদীর বিস্তৃতি বিশ/ত্রিশ হাতের বদলে দেড়/দুই কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আধুনিক খননযন্ত্র সহযোগে বালিপাথর উত্তোলন প্রচলিত হওয়ায় বারকি-বেলচা-বালতি-নেট সহযোগে সনাতন পদ্ধতিতে বালি-পাথর আহরণকারী বারকিশ্রমিকরা বালিপাথর আহরণের কাজ থেকে উচ্ছেদ হয়ে গিয়ে ব্যাপক হারে বেকার হয়ে পড়ে উদ্বাস্তু হতে বাধ্য হয়েছেন এবং হচ্ছেন, যাদের সংখ্যা এক কোটির কাছাকাছি। এই কারণে বালিপাথর মহাল ইজারা বন্ধ করে দিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে বালিপাথর আহরণের পদ্ধতি চালু করে মহালগুলোতে আগের মতো সরকারি ক্রয়কেন্দ্র চালু করা অধিক সমীচীন বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। আমরা প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার সর্বগ্রাসী ক্ষতি থেকে সুরমার উত্তরপাড়ের সর্বস্তরের মানুষের বিশেষ করে বারকিশ্রমিকদের মুক্তি কামনা করি। এই জন্য বারকিশ্রমিকদের পুরনো পদ্ধতিতে বালি-পাথর আহরণের পথ খোলে দেবার ব্যবস্থা হিসেবে বালি-পাথর মাহলের ইজারা বন্ধের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে বালি-পাথর ক্রয়কেন্দ্র চালু করার দাবি করছি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মহোদয়ের কাছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ